CrPC

আদালতের এখতিয়ার ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এ বর্ণনা করা হয়েছে এবং এই আইন শুধুমাত্র ফৌজদারি অপরাধের বিচারের এখতিয়ার নিয়ে কাজ করে থাকে। পক্ষান্তরে, দেওয়ানী আদালতের এখতিয়ার দেওয়ানী কার্যবিধিতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

আমরা সবাই মোটামুটি জানি যে, পৃথিবীর প্রতিটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক ন্যায় বিচার পেতে আদালতের দারস্থ হয়ে থাকে।অনুরূপভাবে, আমরাও ন্যায় বিচার পেতে আদালতের আশ্রয় নিয়ে থাকি। তবে আমরা অনেকেই কোন জানি না যে, বাংলাদেশের কোন আদালতের কী ধরণের এখতিয়ার রয়েছে। ফলে, আমাদের প্রার্থীত বিষয়ের বিচার করার এখতিয়ার কোন আদালতের আছে তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত একজন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি মামলা দায়ের করার জন্য একজন আইনজীবীর স্মরণাপন্ন হয়ে থাকেন।কাজেই এ ব্যাপারে প্রাক-ধারণা না থাকলে মামলাকারী ব্যক্তি নিম্নোক্ত সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন-

  • আইনজীবী কর্তৃক হয়রানির শিকার হতে পারেন;
  • ভূল আদালতে মামলা দায়ের করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন; এবং
  • সর্বোপরি আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট হতে পারে।

ফৌজদারি আদালতের এখতিয়ারসমূহ

যদি কোনো ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধ ছাড়া অন্য কোনো অপরাধ করেন এবং সেই সময়ে বা আদালতে হাজির হওয়ার তারিখে তার বয়স ১৫ বছরের কম হয়, তাহলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা মুখ্য মহানগরীর ম্যাজিস্ট্রেট তার বিচার করতে পারবেন অথবা  প্রণীত আইন অনুসারে সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়েছেন, এবং ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত ক্ষমতা পুরোপুরি বা আংশিকভাবে প্রয়োগ করার ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়েছেন তিনি তা করতে পারবেন।

বাংলাদেশ হাইকোর্ট বিভাগ

বাংলাদেশের হাইকোর্ট বিভাগ আইনে অনুমোদিত যেকোন দণ্ড প্রদান করতে পারেন।দা য়রা জজ বা অতিরিক্ত দায়রা জজ আইনে অনুমোদিত যে কোনও শাস্তি দিতে পারেন, তবে এই ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

সহকারী দায়রা জজ

সহকারী দায়রা জজ (Assistant Sessions Judge) মৃত্যুদণ্ড বা ১০ বছরের বেশি কারাদণ্ড ছাড়া আইনে অনুমোদিত যে কোনও শাস্তি দিতে পারেন। কোন সহকারী দায়রা জজ, অতিরিক্ত দায়রা জজ (Additional Sessions Judge) হিসাবে বিবেচিত হলে, মৃত্যুদণ্ড ছাড়া আইনে অনুমোদিত যে কোনও দণ্ড প্রদান করতে পারেন।

ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ [সর্বশেষ সংশোধিত, ২০১২] এর ৩২ ধারা অনুসারে, ম্যাজিস্ট্রেটের নিম্নবর্ণিত আদালতসমূহ নিম্নলিখিত দণ্ড দিতে পারবেন-

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবং প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আইনে অনুমোদিত নিঃসঙ্গ অবরোধসহ ৫ বছরের অধিক কারাদণ্ড, অনধিক ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড ও বেত্রাঘাত শাস্তি প্রদানের এখতিয়ার আছে।

দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট (Second Class Magistrate) আইনে অনুমোদিত নিঃসঙ্গ অবরোধসহ সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদণ্ড, ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকার অনধিক অর্থদণ্ড করতে পারেন। 

তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট (Third Class Magistrate) আইনে অনুমোদিত সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ২,০০০/- (দুই হাজার) টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করতে পারেন।

যেকোন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত জরিমানার অর্থ প্রদানে ব্যর্থতার জন্য শর্ত সাপেক্ষে আইনে অনুমোদিত যে কোন মেয়াদের কারাদণ্ড দিতে পারেন।